নামাযের পর মুনাজাতে পঠিতব্য কতিপয় মাছুর দুআ
নামাযের পর মুনাজাতে পঠিতব্য কতিপয় মাছুর দুআ রাসূলুল্লাহ (সা.) ও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ক্ষেত্রে
অনেক গুরুত্বপূর্ণ দুআ করেছেন। এ বিষয়ে অনেক স্বতন্ত্র কিতাবও রয়েছে। নিম্নে
কয়েকটি অতিব গুরুত্বপূর্ণ দুআ উল্লেখ করা হলো যেগুলো একজন দুআকারী তার মুনাজাতে
পাঠ করতে পারেন।
১. রাসূলুল্লাহ (সা.) নামাযের পরে নিম্নোক্ত দুআটি পাঠ করতেন।
- اللَّهُمَّ أَنْتَ السَّلَامُ وَمِنْكَ السَّلَامُ، تَبَارَكْتَ يَا ذَا الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা আনতাস সালামু ওয়া মিনকাস সালামু, তাবারাকতা ইয়া যাল জালালি ওয়াল ইকরাম।
অর্থ: হে আল্লাহ তুমি শান্তিময়, তোমার থেকে শান্তি বর্ষিত হয়, তুমি কল্যাণময়, এম হে সম্মান ও প্রতিপত্তির মালিক।
**তথ্য- হাদীসটি সহীহ। সহীহ মুসলিম, প্রাগুক্ত, হা. নং-৫৯১।
২. হযরত আনাস ইবনে মালিক বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) অধিক পরিমাণে নিম্নের দুআটি পাঠ করতেন।
اللَّهُمَّ رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً، وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً، وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা রব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া হাসানাতাও ওয়া ফিল আখিরাতি হাসানাতাও ওয়াকিনা আযাবান্নার।
অর্থ: হে আমাদের রব, আমাদেরকে দুনিয়াতে কল্যাণ দিন। আর আখিরাতেও কল্যাণ দিন এবং আমাদেরকে জাহান্নামের শান্তি থেকে রক্ষা করুন।
**তথ্য- হাদিসটি সহীহ। সহীহ বুখারী, প্রাগুক্ত, হা, নং-৬৩৮৯; সুনানু তিরমিযী, প্রাগুক্ত, হা. নং-৩৫২২।
৩. হযরত সাদ হতে বর্ণিত, 'রাসূলুল্লাহ (সা.) প্রত্যেক নামাযের পরে এই বাক্যগুলি দ্বারা দুআ করতেন।'
"اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْجُبْنِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنَ الْبُخْلِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ أَرْذَلِ الْعُمُرِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الدُّنْيَا وَعَذَابِ الْقَبْرِ "
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিনাল যুবনি ওয়া আউযুবিকা মিনাল বুখলি ওয়া আউযুবিকা মিন আরাযালিল উমুরি ওয়া আউযুবিকা মিন ফিতনাতিদ্দুনিয়া ওয়া আযাবিল কবর।
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট কাপুরুষতা, কৃপণতা, অতি বার্ধক্য এবং দুনিয়ার ফিতনা ও কবরের আযাব থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
**তথ্য-হাদীসটি সহীহ। সুনানু তিরমিযী, প্রাগুক্ত, হা. নং-৩৫৬৭; সুনানু নাসায়ী, প্রাগুক্ত, হা. নং-৫৪৪৭; সহীহ ইবনে খুজাইমা, প্রাগুক্ত, হা. নং-৭৪৬।
৪. হযরত আদম ও হাওয়া (আলাইহিমাস সালাম) আল্লাহ তাআলার নিকট এই দুআ করেছিলেন,
- رَبَّنَا ظَلَمْنَا أَنْفُسَنَا وَإِنْ لَمْ تَغْفِرْ لَنَا وَتَرْحَمْنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِينَ
উচ্চারণ: রব্বানা যলামনা আনফুসানা ওয়া ইন লাম তাগফির লানা ওয়া হারহামনা লানাকুনান্না মিনাল-খাসিরীন।
অর্থঃ হে আমাদের রব, আমরা নিজেদের প্রতি জুলুম করেছি, আপনি যদি ক্ষমা একরেন এবং দয়া না করেন, তবে আমরা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাব।
**তথ্য-সূরা আরাফ: ৩৩।
৫. রাসূলুল্লাহ (সা.) হযরত মুয়ায ইবনে জাবাল কে প্রত্যেক নামাযের পর নিম্নোক্ত দুআটি পাঠ করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
- اللَّهُمَّ أَعِنِّي عَلَى ذِكْرِكَ وَشُكْرِكَ وَحُسْنِ عِبَادَتِكَ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা, আইন্নী আলা যিকরিকা ওয়া শুকরিকা ওয়া হুসনি ইবাদাতিকা।
অর্থ: "হে আল্লাহ, আপনি আমাকে আপনার যিকির করতে, শুকরিয়া আদায় করতে এবং আপনার ইবাদত সুন্দরভাবে করার তাওফীক ও শক্তি প্রদান করুন।"
**তথ্য-হাদীসটি সহীহ। সুনানু আবী দাউদ, প্রাগুক্ত, হা, নং-১৫২২, মুসতাদরাক হাকিম, প্রাগুক্ত, হা, নং-১০১০, সহীহ ইবনু হিব্বান, হা. নং-৯৩৫।
৬. ঋণমুক্তির দুআ: রাসূলুল্লাহ (সা.) ঋণমুক্তির জন্য নিম্নের দুআটি শিক্ষা দিয়েছেন,
- اللَّهُمَّ اكْفِنِي بِحَلَالِكَ عَنْ حَرَامِكَ، وَأَغْنِنِي بِفَضْلِكَ عَمَّنْ سِواكَ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাকফিনী বিহালালিকা আন হারামিকা ওয়া আগনিনী বিফাদলিকা আম্মান সিওয়াকা।
অর্থ: “হে আল্লাহ, আপনি আপনার হালালের মাধ্যমে আমাকে হারাম থেকে রক্ষা করুন। আপনার দয়া ও বরকত প্রদান করে আমাকে আপনি ছাড়া অন্য সকলের মুখাপেক্ষী হওয়া থেকে হিফাযত করুন।
**তথ্য-হাদীসটি সহীহ। সুনানুত তিরমিযী, প্রাগুক্ত, হা. নং-৩৫৬৩, সহীহ ইবনে হিব্বান, প্রাগুক্ত, হা, নং- ১৯৭৪; আল মুসতাদরাক, প্রাগুক্ত, হা. নং-১০১০।
No comments